বাংলার প্রাচীন জনপথ হরিকেল-এর বর্তমান নাম কী?

প্রশ্নঃ বাংলার প্রাচীন জনপথ হরিকেল-এর বর্তমান নাম কী?
ক) সিলেট ও চট্টগ্রাম 
খ) ঢাকা ও ময়মনসিংহ 
গ) কুমিল্লা ও নোয়াখালী 
ঘ) রাজশাহী ও রংপুর

সঠিক উত্তরঃ ক) সিলেট ও চট্টগ্রাম 

• প্রাচীন বাংলার অন্যতম জনপদ হরিকেল - এর অন্তর্ভূক্ত ষঅঞ্চল বর্তমানে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত।

- সুতরাং আলোচ্য প্রশ্নের ক্ষেত্রে সঠিক উত্তর – ক) সিলেট ও চট্টগ্রাম। 

প্রাচীন জনপদ:
- প্রাচীন যুগে বাংলা বিভিন্ন জনপদে বিভক্ত ছিল এবং এই জনপদবাসীরাই স্ব-স্ব জনপদের নামেই পরিচিতি লাভ করে।
- প্রাচীন কাল থেকে আরম্ভ করে আনুমানিক ষষ্ঠ ও সপ্তম শতক পর্যন্ত পুন্ড্র, গৌড়, রাঢ়, সূহ্ম, তাম্রলিপ্ত, সমতট, বঙ্গ, বরেন্দ্র, প্রাচীন বাংলা - চন্দ্রদ্বীপ ইত্যাদি জনপদে বিভক্ত ছিলো।
- এই জনপদগুলো স্বতন্ত্র ও পৃথক, মাঝে মাঝে বিরোধ মিলনে একের সাথে অন্যের যোগাযোগের বিষয়টি লক্ষ করা যায়।
- বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদগুলোর নির্দিষ্ট সীমারেখা নির্ণয় করা বা ও সংকোচনের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা যুগে যুগে তাদের সীমার বিজ্ঞান দুরূহ কাজ।

হরিকেল:
- হরিকেল প্রাচীন পূর্ববঙ্গের একটি জনপদ।
- হরিকেল জনপদের কথা প্রথম জানা যায় প্রথম শতকের চট্টগ্রামে প্রাপ্ত লিপিতে। চন্দ্রবংশীয় লিপিতেও হরিকেল রাজ্যের কথা আছে। 
- হরিকেল জনপদ – আধুনিক সিলেট থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত দুটি প্রাচীন গ্রন্থের পাণ্ডুলিপিতে হরিকোল (হরিকেল) ও বর্তমান সিলেট বিভাগ অভিন্ন বলে উল্লিখিত।

অন্যান্য জনপদের অবস্থান :
পুন্ড্রু:
- প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে পুণ্ড্রই ছিল বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন ও সমৃদ্ধ জনপদ।
- পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর। বর্তমান বগুড়া শহরের অদূরে করতোয়া নদীর তীরে পুন্ড্রনগর অবস্থিত। পরবর্তী কালে এর নাম মহাস্থানগড় হয়।
- এ রাজ্যের বিস্তৃতি বর্তমান – বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুর পর্যন্ত ছিল।

বঙ্গ:
- বৃহত্তর ফরিদপুর, বিক্রমপুর, বাখেরগঞ্জ, পটুয়াখালীর নিচু জলাভূমি নিয়ে ‘বঙ্গ' জনপদ গঠিত হয়েছিল।
- এই অঞ্চলে বসবাসকারী ‘বঙ্গ' জনগোষ্ঠী থেকে 'বঙ্গ' নামের উৎপত্তি ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়।
গৌড়:
- বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহীর অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ছিলো 

রাঢ়:
- রাঢ় জনপদের অবস্থান ছিলো বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে। 
• সমতট: বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিলো। 
• বরেন্দ্র: বর্তমান রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল জুড়ে বিরাজমান ছিলো।

 • চন্দ্ৰদ্বীপ: বর্তমান বরিশাল অঞ্চলে চন্দ্রদ্বীপ নামক একটি জনপদের সৃষ্টি হয়েছিল। এ জনপদটি বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। 

তাম্রলিপ্ত: বর্তমান ভারতের মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তের প্রাণকেন্দ্র। সপ্তম শতক থেকে এটি দণ্ডভুক্তি নামে পরিচিত হতে থাকে।

উৎস: i) বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, SSC Programe, উন্মুক্ত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
ii) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ওয়েবসাইট
iii) বাংলাপিডিয়া

Post a Comment

0 Comments