নৈতিক মূল্যবোধ বিষয়ে একটি রচনা লিখুন।

ভূমিকা: নৈতিক মূল্যবোধ মানুষের জীবনে অনুসরণযোগ্য এমন কিছু আচরণবিধি, যা মানুষের জীবনব্যবস্থা ও জীবনপদ্ধতিকে করে তোলে সুন্দর, নির্মল ও রুচিস্নিগ্ধ। এর সাথে জড়িত আছে সততা, কর্তব্যনিষ্ঠ, শ্রম, উত্তম চরিত্র, শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা, অধ্যবসায়, সর্বোপরি সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত হওয়া ইত্যাদি বিশেষ কতগুলো গুণ। নৈতিক মূল্যবোধ মানবচরিত্রকে করে তোলে সুষমামণ্ডিত। তাই মানুষের আত্মিক সামাজিক উৎকর্ষের জন্য এবং জাতীয় জীবনে উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের লালন, চর্চা ও বিকাশের বিশেষ গুরুত্ব আছে। এ কারণে শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্যই হলো মানবচিত্তে নৈতিক মূল্যবোধের উৎসারণ এবং তার মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা।
নৈতিক মূল্যবোধ বিষয়ে একটি রচনা লিখুন।

নৈতিকতার সংজ্ঞা: ইংরেজি 'Ethics' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো নীতিশাস্ত্র বা নীতিবিদ্যা। এটি রীতিনীতি বা অভ্যাসসংক্রান্ত জ্ঞানকে অন্তর্ভুক্ত করে। মানবের রীতি, বিশ্বাস, ও আচার-আচরণের কোনটি ভালো কোনটি মন্দ তা নীতিশাস্ত্র নির্ধারণ করে। তাই মানুষের নৈতিকতার স্বরূপ কী হওয়া উচিত নীতিশাস্ত্র তা নির্ধারণ ও বর্ণনা করে।

উইলিয়াম লিলি বলেন, “দৈনন্দিন কথাবার্তায় ‘ভালো’, ‘ঠিক’, ‘উচিত’ প্রভৃতি যেসব শব্দ অহরহ ব্যবহৃত হয়ে থাকে তাদের যথার্থ অর্থ কী এ জাতীয় প্রশ্ন নিয়েই নীতিবিদ্যা আলোচনা করে”।

সাধারণভাবে বলতে গেলে যে সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করে মানুষ তার দৈনন্দিন ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে তাকে নৈতিকতা বলে। এটি ন্যায়নীতি, ধর্মীয়, সামাজিক ও আইনগত অনুশাসন এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। নৈতিকতা মানুষের রীতিনীতি, আচার-আচরণ, কার্যক্রম ইত্যাদির মধ্যে কোনটি ভালো এবং কোনটি মন্দ তা নির্ধারণ করে। নৈতিকতার কারণেই আমাদের মনে মন্দ কাজ না করে ভালো কাজ করার তাগিদ দেখা দেয়।

অধ্যাপক নিউনার ও কিলিং-এর মতে, “নৈতিকতা হলো বিজ্ঞান ও দর্শনের ঐ সকল কাজ যা মানুষের নৈতিক আচরণ, কর্তব্য এবং বিচার বিবেচনা নিয়ে বিশ্লেষণ করে।

নৈতিকতা সম্পর্কে এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নৈতিকতা হচ্ছে দর্শনের এমন একটি শাখা যার মাধ্যমে মানুষ নির্দিষ্ট নৈতিক কার্যক্রম বা আচরণের সূত্র সম্পর্কে মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সচেষ্ট হয়।

মোটকথা দৈনন্দিন ও সামাজিক কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে মানুষ যে ন্যায়নীতি; সামাজিক, ধর্মীয় ও আইনগত অনুশাসন অনুসরণ করে তাকেই নৈতিকতা বলে। এটি মানুষের একটি অন্যতম আদর্শ বা মানবীয় গুণ হিসেবে বিবেচিত হয়। 

নৈতিকতা মানুষকে সৎ ও ন্যায়ের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে এবং মানুষের মধ্যে দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ জাগ্রত করে ।

মূল্যবোধের ধারণা: মূল্যবোধ হলো একটি প্রত্যয়। এই প্রত্যয় সমাজের সদস্যদের আচরণগত ধারণাকে নিয়ন্ত্রিত করে, সামাজিক শৃঙ্খলা, অখণ্ডতা ও সংহতি বজায় রেখে উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এই প্রত্যয়ের উপাদান হচ্ছে নীতি, মান ও বিশ্বাস। এসব উপাদান স্পষ্ট করে দেয় ব্যক্তি, সমাজ বা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান; ভালোমন্দ, দোষগুণ, ন্যায়পরায়ণতা, নৈতিকতা বিচার করে এবং নৈতিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে কাজের দিক নির্দেশনা। মূল্যবোধ শুধু পর্যবেক্ষণ বা সত্যের উক্তি নয়, এটি হলো অকৃত্রিম ও আপসহীন নীতি যা দৈনন্দিন আচরণে প্রতিফলিত হয়। সামাজিক আচরণের দিক দিয়ে কাম্য মূল্যবোধ হলো সুনাগরিকতা, দলগত বিশ্বস্ততা, সহযোগিতা, স্বার্থত্যাগ, দেশপ্রেম ইত্যাদি। ব্যক্তির নিজস্ব ব্যক্তিগত জীবনের দিক দিয়েও ব্যক্তিগত মূল্যবোধ আহরণ করা প্রয়োজন। সত্যবাদিতা, চারিত্রিক দৃঢ়তা, বন্ধুত্ব, কর্তব্যপরায়ণতা। ব্যক্তিগত মূল্যবোধ ব্যক্তির জীবনকে উন্নতমানে নিয়ে যায়। কোনো সমাজের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ইত্যাদি ধারণাগুলোর মুখ্য ও বৃহৎ অংশ হলো মূল্যবোধের সংগঠন। সামাজিক বিভিন্ন আচরণের ওপর ভিত্তি করে নানা স্তরের মূল্যবোধ তৈরি হয়। সমাজতত্ত্ব ও শিক্ষাতত্ত্বের দিক দিয়ে শিক্ষার্থীর মূল্যবোধ আহরণ গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার ও বিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে সমাজ অনুমোদিত মূল্যবোধ কাঠামো আহরণ ও আয়ত্ত করতে সহায়তা করে ।

নৈতিক মূল্যবোধের স্বরূপ ও গুরুত্ব : নৈতিক মূল্যবোধ মানুষের জীবনে অনুসরণযোগ্য এমন কিছু আচরণবিধি, যা মানুষের জীবনব্যবস্থা ও জীবনপদ্ধতিকে করে তোলে সুন্দর, নির্মল ও রুচিস্নিগ্ধ । নৈতিকতা মানুষকে অন্যায়ের পতন, বন্ধুর পথের বিপদ থেকে বাঁচায় । স্বার্থপরতার প্রলুব্ধকর আকর্ষণ থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে আত্মত্যাগের মহামন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে। নৈতিক মূল্যবোধ মানুষকে দেয় প্রবল ও দৃঢ় মানসিক শক্তি, যার বলে মানুষ যাবতীয় দুর্নীতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করতে শেখে, অন্যায় ও অবৈধ পন্থা অবলম্বন সচেতনভাবে পরিহার করতে শেখে।

নৈতিক মূল্যবোধ মানবচরিত্রকে করে তোলে সুষমামণ্ডিত। ধর্মের কল্যাণধর্মী মর্মবাণী অনুসরণ করা, মিথ্যাকে কায়মনোবাক্যে পরিহার করা, সত্য ও ন্যায়ের আদর্শে পরিচালিত হওয়া, সজ্ঞানে অন্যের ক্ষতি না করা, পরহিতব্রতে যথাসম্ভব নিজেকে সমর্পণ করা—এসবের মাধ্যমেই মানুষের জীবনে নৈতিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটে। নৈতিক মূল্যবোধে আলোকিত মানুষ সমাজে যতই বাড়ে ততই সমাজজীবন হয়ে ওঠে নিষ্কলুষ ও সৌন্দর্যবিভামণ্ডিত। তাই মানুষের আত্মিক সামাজিক উৎকর্ষের জন্য এবং জাতীয় জীবনে উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের লালন, চর্চা ও বিকাশের বিশেষ গুরুত্ব আছে। এ কারণে শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্যই হলো মানবচিত্তে নৈতিক মূল্যবোধের উৎসারণ এবং তার মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা ।

নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়: দুঃখের বিষয় মানবসভ্যতা যখন একুশ শতকের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে তখন মানুষ মূল্যবোধের সংকটে পীড়িত। বিশ্বে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য-লালসা ও পরিভোগ-প্রবণতা মানুষকে লোভী ও স্বার্থান্বেষী করে তুলছে। মানবধ্বংসী মারণাস্ত্রের বিস্তার বিজ্ঞানের অনৈতিক ব্যবহারেরই মারাত্মক ফল। দুনিয়াজোড়া মাদক ব্যবসায়, গণমাধ্যম করায়ত্ত করে স্থূল ভোগবাদী অপসংস্কৃতির প্রচারণা, হলুদ সাংবাদিকতা ইত্যাদি নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই বহিঃপ্রকাশ।

আমাদের দেশেও নৈতিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে ব্যাপক অবক্ষয়ের লক্ষণ আজ প্রকট। সীমাহীন দুর্নীতি সর্বস্তরে গ্রাস করেছে সমাজজীবনকে নীতিহীন, বিবেকহীন মানুষ সদম্ভে সমাজে বিচরণ করছে এবং ন্যায়নীতির কণ্ঠরোধ করার জন্য তারা উঠে-পড়ে লেগেছে। অন্যায় ও অবৈধ পন্থায় বিত্তের পাহাড় গড়ছে লুটেরা ধনীরা। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজজীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও। এখন সমাজে অবৈধ পন্থায় ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ, প্রতিপত্তি, ভোট আদায়ের এক অনভিপ্রেত অস্থির প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এর জন্য বল প্রয়োগও হয়ে গেছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ফলে নৈতিক অবক্ষয় সংক্রামক ভাইরাসের মতো সমাজজীবনের সর্বত্র বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। এমন কি শিক্ষাঙ্গনে, চিকিৎসাসেবায়, বিচারব্যবস্থায় পর্যন্ত দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্র ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ঘটেছে ব্যাপক বিস্তার। মূল্যবোধের এ অবক্ষয় এখন বিবেকবান সব লোককেই গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে ।

নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ: কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণে মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেনি। দীর্ঘকাল ঔপনিবেশিক শাসনের ফলে স্বাধীনতা-উত্তরকালে একাধিক কারণে বাংলাদেশে সামাজিক মূল্যবোধের পূর্ণ অবক্ষায় ঘটেছে। বর্তমানে নানাবিধ কারণে এ অবক্ষয়ের শিকার হলো মানুষ। রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া, জনসংখ্যার আধিক্য, শিক্ষিত বেকারের কর্মহীনতা, সমাজ জীবনে চরম দারিদ্র্য, সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থা না থাকা, ক্ষমতার অপব্যবহার, নেশা জাতীয় দ্রব্যের ব্যাপক ব্যবহার ও সহজলভ্যতা, চলচ্চিত্র ও স্যাটেলাইট চ্যানেলে বিকৃত রুচির বিনোদন, পারিবারিক ভাঙন, ধর্মীয় বিধি-নিষেধকে গুরুত্ব না দেয়া ইত্যাদি কারণে সমাজে নৈতিক অবক্ষয় নেমে আসে। মানুষ যখন নৈতিক মূল্যবোধ হারায় তখন প্রকৃতপক্ষে তার উৎকৃষ্ট চরিত্রকেই হারায়। আর চরিত্রহীন মানুষের দ্বারা সমাজ ও দেশের কোনো অগ্রগতি উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়।

নৈতিক মূল্যবোধ অবক্ষয়ের ফল: নৈতিক মূল্যবোধের অভাবেই বর্তমান সমাজে অন্যায়, অত্যাচার ও দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করছে। মূল্যবোধ ভেঙে পড়লে সমাজে বিশৃঙ্খা ছড়িয়ে পড়ে। মূল্যবোধের অভাবে শিক্ষাগ্রহণ করেও নানা অপকর্মে অনেকে জড়িয়ে পড়ছে। জঘন্য, নিষ্ঠুর কাজকর্ম করেও পেশিশক্তির প্রয়োগে ক্ষমতাবানরা ক্ষমতাহীনের ওপর উৎপীড়ন চালায় সহজেই। ক্ষমতাবলে কে কত বেশি হিংস্র হতে পারে সে প্রতিযোগিতায় মেতেছে সবাই। দেশ-কাল--ধর্মাধর্ম কোনো কিছুতেই তাদের মনোযোগ নেই। মনোযোগ কেবল অর্থসম্পদ, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপত্তির দিকে। তাই আজ সমাজে মানবিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ গৌণ হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতা যখন চরম উন্নতির পথে ধাবমান তখন পরিতাপের হলেও স্বীকার্য আমাদের দেশে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে। ফলে দুর্নীতিতে সর্বোচ্চ শিখরে আসীন আমাদের দেশ। বিশ্বজনের কাছে এ সংবাদ— জাতি হিসেবে আমাদেরকে গৌরবান্বিত করে না বরং আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ আজ কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন। মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ফলেই সমাজে দুর্বৃত্তের দল অন্যায় সংঘটনের সাহস পায়। চাঁদাবাজি, রাহাজানি ও অরুচিপূর্ণ বিনোদন মানুষ মত্ত থাকে তখনি যখন মানুষের মূল্যবোধ থাকে না। একটি সমাজে বা জাতির জীবনে মূল্যবোধের এমন অবক্ষয় কাটিয়ে উঠতে না পারলে তারা নিক্ষিপ্ত হবে আস্তাকুঁড়ে। কাজেই আর কালক্ষেপণ না করে, অবহেলা আর উদাসীনতায় গা না ভাসিয়ে এখনই নৈতিক শিক্ষার প্রসার, মানবিক আচরণ ও মূল্যবোধের উপর জোর দিতে হবে। না হলে আমাদের ভবিষ্যতের দুর্ভাগ্যের জন্য আমাদের দায়ী থাকতে হবে। 

নৈতিক অবক্ষয় রোধের উপায়: আমাদের জাতীয় জীবনে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় জাতীয় সামাজিক সমস্যা হিসেবে আত্মপ্রকাশ। করেছে। দেশ ও জাতির স্বার্থে এ সমস্যার প্রতিকার খুবই জরুরি তবে এ অবক্ষয় রোধ করার জন্য প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তিকে নিজ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নিজে ব্যক্তিগতভাবে সুনীতি ও শুভবোধের চর্চার মধ্য দিয়ে পরিবার ও সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে। সর্বোপরি নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমেই ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতীয় জীবনে সুদিন ফিরে আসবে। বিভিন্ন মনীষী ও ধর্ম প্রবক্তা ন্যায়-নীতি ও মানবিক মূল্যবোধের যে মহান মর্মবাণী মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন, তার গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে। ধর্ম ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে সমাজ থেকে নৈতিক অবক্ষয় নামের অন্ধকার দূর করতে হবে। নৈতিক মূলবোধের পরিপন্থী বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার পাশাপাশি যারা সমাজে অপরাধকর্মে লিপ্ত হবে তাদের জন্যে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং নীতিবোধসম্পন্ন দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। সর্বোপরি নৈতিক শিক্ষার মধ্যদিয়ে সমাজজীবনে ন্যায়-নীতি, মানবিক মূল্যবোধ ও মহৎ আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

উপসংহার: আমাদের সামনে আজ একুশ শতকের পথচলা। নতুন শতকে আমাদের জীবন যেন সুন্দর ও মানবিক মূল্যবোধে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সেজন্য সবার আগে নজর দিতে হবে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। শিক্ষার্থীদের সামনে রাখা চাই নৈতিক মূল্যবোধের আদর্শ। সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের প্রতি জাগাতে হবে তাদের ভালোবাসা। নৈতিক মূল্যবোধের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এখন আমাদের সবাইকে হতে হবে সচেতন, উদ্যোগী ও সক্রিয়। এর জন্য প্রয়োজনে গড়ে তুলতে হবে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন। তা না হলে নৈতিক অধোগতির যে পিছুটান আমাদের জাপটে ধরেছে তার হাত থেকে আমরা নিস্তার পাব না।

Post a Comment

0 Comments